তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিদিন : জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন থেকে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় গণভবন থেকে তিনি এ সম্মেলনে অংশ নেন।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্রদ্ধা নিবেদন ও অনুসরণ করে তিনি বাংলায় ভাষণ দেন।
নিউইয়র্কে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন। বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্র ও সংগঠনের প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ গনভবন থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। আরো উপস্হিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আ.লীগ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব এ. কে. মমেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব সহ অন্যান্য।
নির্বাচন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হয়েছে। বারবার হেরে গিয়েই তারা মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত করতেই বিভিন্ন তথ্য ছড়াচ্ছে এবং পূর্বের ন্যায় জ্বালাও পোড়াও গুম হত্যায় বিঘ্ন ঘটছে বলেই এতো প্রশ্ন তাদের। বিএনপি দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। তিনিও আরো বলেন আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। বর্তমানে অনেক গনমাধ্যম হয়েছে। আ.লীগ সরকারের আমলে মানুষ নিমিশে দেশের এক স্হান থেকে অন্যস্হানে যোগাযোগ ও খবরাখবর প্রচার হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন, যোগাযোগ, প্রযুক্তি এবং খাদ্য ঘাটতি নিরসন, করোনা মোকাবিলা, করোনা ভ্যকসিন দান, বিদ্যুৎ, ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে আ.লীগ সরকারের অবদান। দেশের জন্য আ.লীগ সরকার কাজ করে শতভাগ। তাই জনগণ আ.লীগ সরকারকেই ভোট দিয়ে বিজয় করেছেন, ভবিষ্যতেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পুনারায় নির্বাচিত করবে।
কৃষি বিষয়েও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধান উৎপাদন এবং বিভিন্ন সবজি বারোমাস পাওয়া যাচ্ছে যা কৃষি গবেষণারই অবদান। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ , কৃষি বিষয়ে সরকার উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কস্ট লাগবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে কৃষি উন্নয়নে আরো পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষি রপ্তানিতে নজর দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন বিষয়েও কথা বলেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তিনি নারী পাচার রোধ, মাদক ও চোরাকারবার রোধ নিয়েও তিনি আন্তর্জাতিক মহলে কথা বলেছেন।
জিয়ার সময় সে তার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন লোক, জেলখানায় এবং সৈনিকদের গুম হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারকে পচান্তরে নিশংস হত্যার ঘটনার বিচারের পরিবর্তে তা ধামাচাপা দেয়। এই সব হুম হত্যা বিষয়ে জনমত সৃষ্টি হওয়া উচিৎ।
মুজিব শতবর্ষে ঘর নির্মানে গাফিলতি ও কেউ ষড়যন্ত্র মুলক ভাঙা বিষয়েও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন। প্রশাসনিক লোক গিয়ে দেখেছেন বৃষ্টি জনিত কারন এবং সরকারের উন্নয়নে বাঁধা দিতেও বিভিন্ন স্হানে হাতুর দিয়ে ভাঙা হয়েছে। এসব বিষয় খুবই দুঃখ জনক। সঠিক ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারেও ভাঙা ঘরটাই দেখা হলো কিন্তু কিভাবে ভাঙা হলো সেটা কেউ দেখলেন না। যেখানে ঘর প্রদান ও জনগণের কর্মসৃস্টি হচ্ছে। যেসব জায়গায় অনিয়ম হয়েছে সেখানে সাথে সাথে ব্যবস্হা নেওয়া হয়েছে। একসাথে ৭০ হাজার মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। একজন মানুষ ঘর পেলো এ বিষয়টাও সকলের দেখা উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশের সহিত বন্ধুত্ব পূর্ন শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়েও কথা বলেন। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা, দেশের মঙ্গল কামনায় শান্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে জনগনের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আহবান জানান। দেশে শান্তি বজায় এর ফলে দেশ আজ উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে জঙ্গিবাদ, বিশৃঙ্খলা হলে দেশ ও জনগণ ক্ষতি গ্রস্হ হয় এতে সবাইকেই সজাগ থাকতে হবে।
দেশে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক প্রতারণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যখন এসব হায় হায় কোম্পানি তৈরি হয়, আপনারা (গণমাধ্যম) একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না। মানুষের দুঃসময়ে কিছু প্রতারক তাদের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। যখন এসব হায় হায় কোম্পানি তৈরি হয়, আপনারা (গণমাধ্যম) একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না। আমরা চেষ্টা করবো তাদের (প্রতারিতদের) টাকা হাতে পৌঁছে দিতে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ব বিদ্যালয়ে গবেষণায় অনিহা বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গবেষণা ও প্যাকটিক্যালে মনোযোগ দিতে হবে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন ১৯৯৬ এর পর থেকেই ট্রাস্ট ফান্ড- ম্যাডিক্যাল, কৃষি ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। গবেষণা বিষয়ে আন্তরিক হতে হব। বিলাসিতার কারনে গবেষণায় সময় দেবেন না এটা মোটেও কাম্য নয়। এছাড়াও জনগণের জিবন যাত্রার মান উন্নয়ন ও দেশে উন্নয়নে সার্বিক নানা বিধ আলোচনা হয়।

