বাংলাদেশ :
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ২০২১: বাংলাদেশে প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটি। চালের সংকট কমাতে কৃষিমন্ত্রী দেশের মানুষকে ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ ধরনের তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
মানুষের ভাত বেশি খাওয়ার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে- এ ধরনের কোনো মন্তব্য করেননি বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর কথা বলেছি। ভাত বেশি খাওয়া কিংবা চালের দাম নিয়ে কোনো কথা আমি বলিনি। আমি এ প্রসঙ্গই আনিনি।
পত্রিকায় ভুল ব্যখ্যা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর কথা বলেছি। এ কথা আমি আরো একদিন বলেছি, আমাদের এক মিডিয়ার সাংবাদিকদের ফোরামে। ৭৭টি মিডিয়া আমার বক্তব্য কাভার করেছে। একটি ভুঁইফোড় পত্রিকা তারা নিউজ করেছে আমি নাকি বলেছি, মানুষ ভাত বেশি খায় এ জন্য চালের দাম বেড়ে গেছে। এ ধরনের কথা আমি কোনোদিনই বলিনি। আমি এ প্রসঙ্গই আনিনি।
জবাবে বন ও পরিবেশ উপকমিটির এই সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ধানের জাত এবং চাষাবাদ কি হওয়া উচিত- এটা নিয়ে কথা হয়। এ বিষয়ে আমাদের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি বিষয় ছিলো সেদিনের আলোচনায়। আমরা চাল জাতীয় খাবারে অনেকটা আত্মনির্ভরশীল। যদি ভালো আবহাওয়া থাকে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। আমরা খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকি।
তিনি বলেন, কিন্তু এখন আমাদের লক্ষ্য হলো পুষ্টি জাতীয় খাবার। এটি আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছি, আমরা পুষ্টি জাতীয় খাবার এবং সি-ফুড মানুষকে দেবো। এটাই এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ। এটা করার জন্য কৃষিকে আধুনিকীকরণ করতে হবে। আমরা যান্ত্রিকীকরণ করছি। আমরা কৃষিপণ্যকে যান্ত্রিকীকরণ করবো প্রক্রিয়াজাত করণের মাধ্যমে। আমাদের কৃষকদের আয় বাড়াতে হবে, তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের লক্ষ্য হলো আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল ও মেধাবী করতে তাদেরকে পুষ্টিজাতীয় খাবার দিতে হবে। জাপান চার বেলা ভাত খায়, কিন্তু সেটা অনেক কম। সেখানে আমরা আগে ৪৩০ গ্রাম খেতাম, এখন এটা কমে ৩৭০ গ্রামে আসছে। আস্তে আস্তে কমছে। মানুষের যেহেতু আয় বাড়ছে, মানুষ এখন শাক সবজি, ফলমূল, ডিম, মাছ, মাংস বেশি খাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা কৌশলগত পরিকল্পনা করেছি। আমরা যখন সরকারে এসেছি তখন থেকেই এগুলো শুরু করেছি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীরা বিআর-৬৭ নামে একটা জাত আবিষ্কার করেছেন। ইনশাআল্লাহ এটা কোস্টাল এরিয়াতে হবে। আমরা গমের জাত আবিষ্কার করছি যা উষ্ণ আবহাওয়ায় হবে। অর্থ্যাৎ জলবায়ু পরিবর্তন হোক আর না হোক আমরা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছি। কারণ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষি খাতই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- উপকমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য় অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশে সেন্ট্রার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও সিনিয়র সাংবাদিক কাওসার রহমান।
![](https://bd-tjprotidin.com/wp-content/uploads/2021/10/7-300x42.gif)
![](https://bd-tjprotidin.com/wp-content/uploads/2024/02/IMG-20240220-WA0000-300x300.jpg)